***ভাঙা টু পায়রা রেল প্রকল্প বাস্তবায়নে বরিশালে ভূমি অধিগ্রহণ শুরু
হাসিবুল ইসলাম :: বরিশাল তথা গোটা দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার একাধিক উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। পায়রা সমুদ্র বন্দরের পরে সর্বশেষ তাদের উন্নয়নকর্মে যুক্ত হয়েছে ফরিদপুরের ভাঙা টু পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল সংযোগ স্থাপন। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে কাজও শুরু হয়ে গেছে। বহুল প্রত্যাশিত এই প্রকল্পটি বাস্তবে রুপ দিতে সরকারের পাশাপাশি এই অঞ্চলের মানুষেরও আগ্রহের কমিতি নেই। প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে পাশে থাকার অঙ্গীকারও করেছে অনেকে। গত বুধবার ভাঙা-পায়রা রেললাইন প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ বরিশালে ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার চিত্র জানিয়ে দিয়েছে স্বপ্নের রেল সংযোগ বাস্তবায়ন প্রশ্নে এ অঞ্চলের মানুষ কতটা আন্তরিক।
যদিও অনেক স্থানে ভ‚মি অধিগ্রহণ নিয়ে কিছুটা জটিলতার কথা শোনা গেছে। কিন্তু এতে এ উন্নয়ন প্রকল্পে তেমন একটা প্রভাব ফেলবে না দাবি করেছে সংশ্লিষ্টরা।
সরকারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়- ২১২ কিলোমিটার রেললাইনে মধ্যে ১২টি প্রধান স্টেশন হবে। এর মধ্যে বরিশাল নগরীর মধ্যে থাকবে দুটি এবং বিমানবন্দর এলাকায় একটি। এছাড়া বড় ধরনের আটটি ব্রিজ এবং কয়েক শ’ ছোট ও মাঝারি আকারের ব্রিজ-কালর্ভাট নির্মাণ করা হবে। ভাঙা টু পায়রা রেললাইন প্রকল্পের প্রশস্ততা হবে ১০০ মিটার। দুটি রেললাইনের বিষয়টি মাথায় রেখে ১০০ মিটার জমি অধিগ্রহণ শুরু হয়েছে।
বরিশাল জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়- গত বুধবার বরিশাল শহরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সাথে মতবিনিময় করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে একটি লাইন নির্মাণ করা হবে। এতে কী পরিমাণে পরিবার বা মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে তাদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। এ সমীক্ষা শেষ হতে আরও কিছুদিন দিন লাগবে।
কিন্তু জটিলতা হচ্ছে- অধিগ্রহণ করতে যাওয়া ভ‚মিতে মসজিদ মন্দির বসতবাড়িসহ জনগুরুত্বপূর্ণ অনেক স্থাপনা পড়েছে। এসব ভূমি মালিকদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপুরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এরপরেও মসজিদ মন্দির ধর্মীয় অনুভুতির স্থান হওয়ায় অনেকে তা ছাড়তে চাইছেন না।
অবশ্য ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালট্যান্ট কম্পানি লিমিটেডের সিনিয়র পরামর্শক আকতারুল ইসলাম খান বরিশালটাইমসকে বলেন, এই ২১২ কিলোমিটারের মধ্যে মসজিদ, মন্দির, কবরস্থান, শ্মশানসহ যেসব ধর্মীয় উপাসনালয় থাকবে সেগুলো প্রকল্পের ব্যয়ে অন্যত্র পুনঃস্থাপন ও স্থানান্তর করে দেওয়া হবে। এমনকি ভূমি অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী সব মালিককে পাওনা পরিশোধ করা হবে। সেখান থেকে কেউ বঞ্চিত হবে না। এমন প্রতিশ্রুতি পেয়ে ভুমি মালিকেরা সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকারও করেছেন বলে দাবি করেছেন এই কর্মকর্তা।
এমতাবস্থায় পর্যবেক্ষক মহলের অভিমত- বর্তমান সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়ন বরিশাল তথা গোটা দক্ষিণাঞ্চলের চিত্রপট পাল্টে দিয়েছে। এখন পদ্মা সেতুর পাশাপাশি রেল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা তাদের একধরণের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। এই প্রকল্পটি দুটি বাস্তবায়নে সরকারের অধিক তৎপরতা দক্ষিণাঞ্চলবাসী ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করায় স্বপ্ন পূরণ যেন আরও একধাপ এগিয়ে গেছে।
তবে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যেনে ব্যক্তি বিশেষ ক্ষতিগ্রস্ত না হল সেই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বরিশালটাইমসকে বলেন- রেল প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত হতে যাওয়া ভূমি মালিকদের নিয়ে সংশ্লিষ্ট কাজ করে যাচ্ছে। প্রত্যেক মালিককে ভূমির সঠিক কাগজপত্র সংরক্ষণ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের অন্যত্র পুনঃস্থাপন ও স্থানান্তর করে দেওয়া হবে।’