Home প্রচ্ছদ মির্জাগঞ্জে স্বামীর এলোপাতাড়ি কোপে গৃহবধূর কবজি প্রায় বিচ্ছিন্ন

মির্জাগঞ্জে স্বামীর এলোপাতাড়ি কোপে গৃহবধূর কবজি প্রায় বিচ্ছিন্ন

মির্জাগঞ্জে স্বামীর এলোপাতাড়ি কোপে গৃহবধূর কবজি প্রায় বিচ্ছিন্ন

স্বামীর এলোপাতাড়ি কোপে গুরুতর আহত হয়েছেন পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের এক গৃহবধূ। গত সোমবার উপজেলার কাঁকড়াবুনিয়া ইউনিয়নের গাজীপুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সুমি আক্তার (২১) নামের গুরুতর আহত ওই গৃহবধূকে প্রথমে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁকে আবার মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

অভিযোগ ওঠা ব্যক্তির নাম মন্টু সিকদার (৩৫)। সুমিকে মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। দুই দিন পর সেখান থেকে সুমিকে আবার মির্জাগঞ্জে নিয়ে আসা হয়।

আহত সুমির ভাষ্য, স্বামী মন্টুর নির্যাতন সইতে না পেরে ঢাকায় চলে আসার পর মা এবং ৩ বছরের ছেলেকে নিয়ে কোনো রকম দিন কাটছিল তাঁর। কিন্তু তিনি কাজ করছেন, এই খবর পেয়ে স্বামী মন্টু মুঠোফোনে টাকার জন্য হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। এ পরিস্থিতিতে মাসখানেক আগে স্বামীকে তালাকের নোটিশ পাঠান সুমি। এরপর ঈদ উপলক্ষে বাড়িতে এলে হামলা চালান মন্টু।

সুমির মা আলেয়া বেগম বলেন, ‘টাকাপয়সা নেই, তাই মেয়েকে বরিশাল থেকে এখানে আনা হয়েছে। মন্টু সিকদার মেয়েকে কোপানোর পর এখন হুমকি দিচ্ছেন, যাতে ঘটনা থানা-পুলিশ পর্যন্ত না গড়ায়। আমরা গরিব মানুষ, মামলা বুঝি না। আমার মেয়েটা যেন প্রাণে বাঁচে আপনারা সে ব্যবস্থা করেন।’

সুমির পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিয়ের পর থেকে কথায়-কথায় সুমির ওপর নির্যাতন চালাতেন মন্টু । তাঁর দাবি করা যৌতুক সুমির দরিদ্র মা-বাবার পক্ষে দেওয়া সম্ভব ছিল না। স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে মা ও শিশুপুত্র নয়নকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন সুমি। কাজ নেন পোশাক কারখানায়। এরপরও মন্টু মুঠোফোনে সুমিকে নানা ধরনের হুমকি দিয়ে টাকা চাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে সুমি তাঁর স্বামীকে তালাকের নোটিশ পাঠান।

ঈদের ছুটিতে মাকে নিয়ে বাড়িতে যান সুমি। পরিবারের অভিযোগ, গত সোমবার গভীর রাতে বাড়িতে এসে মন্টু ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুমিকে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। এতে সুমি গুরুতর আহত হন।

মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুর রহমান শামীম বলেন, সুমির বাম হাতের কবজির হাড় কেটে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ও ডান হাতের কনুইয়ের ওপরের বেশির ভাগ অংশ কেটে গেছে। সঠিক চিকিৎসা দিতে না পারলে মেয়েটিকে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হতে পারে।

কাঁকড়াবুনিয়া ইউপির চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মেয়েটিকে নির্মমভাবে কুপিয়েছেন তাঁর স্বামী। পরিবারটি খুব গরিব। অর্থাভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না তাঁর। ঘটনাটিও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।

মির্জাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুমুর রহমান বিশ্বাস জানান, পরিবারটি হতদরিদ্র, মেয়ের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত। তাই মামলা করতে দেরি হচ্ছে।

এ বিষয়ে মন্টু সিকদারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here