শামীম আহমেদ ॥ বরিশালের গৌরনদী পৌর এলাকার দক্ষিণ পালরদী মহল্লার আনোয়ারা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ভুল চিকিৎসায় আফরোজা আক্তার মুন্নী (২৩) নামের এক প্রসূতি ও তার গর্ভজাত সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে থানা পুলিশ ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে। একইসাথে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ক্লিনিকের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অজয় হালদার ও অপারেশন থিয়েটারের সহযোগি রিপন মিস্ত্রিকে আটক করেছে।
ঘটনার পর পরই ক্লিনিক থেকে পালিয়ে গেছে কথিত চিকিৎসক ও আনোয়ারা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের মালিক হেদায়েত উল্লাহ। ভুল চিকিৎসায় মৃত প্রসূতি গৃহবধূ উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের দত্তেস্বর গ্রামের কুদ্দুস তালুকদারের স্ত্রী।
মৃতের স্বজনরা জানান, প্রসব বেদনা শুরু হওয়ার পর সিজার অপারেশনের জন্য আফরোজা আক্তার মুন্নীকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। বিকেলে সিজার অপারেশনের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক চিকিৎসককে সার্জন হিসেবে উপস্থিতি করে হেদায়েত উল্লাহ ওই প্রসূতিকে ভুল এ্যানেসথেসিয়া পুশ করার সাথে সাথেই প্রসূতি গৃহবধুর মৃত্যু হয়। তাৎক্ষণিক বিষয়টি ধামাচাঁপা দিতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ রোগীর অবস্থা খারাপ বলে শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানোর জন্য এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসে।
সূত্রে আরও জানা গেছে, অপারেশন থিয়েটারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি গৃহবধূর মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পেরে সন্ধ্যায় তার (গৃহবধূ) স্বজনরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এরপূর্বে হেদায়েত উল্লাহসহ অন্য চিকিৎসক কৌশলে ক্লিনিক থেকে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাতে মৃত গৃহবধু আফরোজা আক্তার মুন্নীর লাশ উদ্ধার করে। এসময় ক্লিনিকের দুইজন স্টাফকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বিষয়টি ধামাচাঁপা দেয়াসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক চিকিৎসককে রক্ষার জন্য একটি মহল জোর প্রচেস্টা অব্যাহত রেখেছে। গৌরনদী মডেল থানার ওসি মোঃ গোলাম ছরোয়ার জানান, এ ঘটনায় মৃত গৃহবধূর স্বামী কুদ্দুস তালুকদার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, হেদায়েত উল্লাহ একজন ফার্মাস্টিস হয়েও নিজেকে এমবিবিএস চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন থেকে অপচিকিৎসা দিয়ে আসছে। গত বছরের মে মাসে অপচিকিৎসার অভিযোগে হেদায়েত উল্লাহ থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলো। বেশ কিছুদিন সে কারাভোগ করে জামিনে বের হয়ে পূর্ণরায় অপচিকিৎসা শুরু করেন।