ঝালকাঠি শহরের মানুষের চিত্তবিনোদনের জন্য তেমন কোন স্থান নেই। তাই বিভিন্ন উৎসবে গাবখান সেতুতে মানুষের ঢল নামে। একটি সেতুই ছিল ঘুরতে পছন্দ করা মানুষের একমাত্র বিনোদনের স্থান। স্থানীয়দের চিত্তবিনোদনের কথা চিন্তা করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গড়ে তোলা হচ্ছে ‘ডিসি পার্ক’। শহরের সুগন্ধা নদী তীরের লিচু তলা এলাকায় মনোরম পরিবেশে গড়ে তোলা হচ্ছে পার্কটি। দ্রুত গতিতে পার্কের সৌন্দর্য বর্ধণের কাজ চলছে।
জানা যায়, ঝালকাঠি শহরের সুগন্ধা নদী তীরের লিচুতলা এলাকায় বিনোদনপ্রেমীদের যাতায়াত ছিল আগে থেকেই। জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক ওই স্থানটি সৌন্দর্য বর্ধন করে ডিসি পার্ক গড়ে তেলার সিদ্ধান্ত নেন। কালেক্টরেট বিদ্যালয়ের পাশে এই পার্কটি গড়ে তোলায় স্থানীয়রাও খুশি। গাছের ছায়ায় সারাক্ষণই শীতল থাকে পার্কের পরিবেশ। ছায়াসুনিবির পার্কে বসে দেখা যাবে সুগন্ধা নদীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। পরন্ত বিকেলে পাখির কিচিমমিচির শব্দে মুখরিত হয়ে উঠে ডিসি পার্ক। রাতেও ঘুরতে আসা মানুষের সুবিধার্থে স্থাপন করা হয়েছে নানা ধরণের আলোকসজ্জা। পার্কের মধ্যে রয়েছে পিকনিক স্পট। শিশুদের জন্য বিভিন্ন খেলনা নির্মাণের প্রস্তুতিও চলছে। পার্কে থাকবে কফি কর্নার, একটি ওভার ব্রিজ। সীমানা প্রাচীর দিয়ে নিরাপত্তা বেষ্টুনী দেওয়া হবে।
ঝালকাঠির শহরের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট শামীম আলম বাবু বলেন, শহরের মধ্যে ঘুরতে যাওয়ার কোন পরিবেশ বা স্থান নেই। মানুষ ঈদ বা অন্য কোন বিশেষ সময় গাবখান সেতুতে ঘুরতে যায়। আমরাও অনেকবার গিয়েছি। এখন শহরের মধ্যেই নদীতীরে একটি পার্ক হচ্ছে। এখানে মানুষের ভীর বেশি থাকবে। কারণ পরিবেশটা অত্যন্ত ভাল ও মনোরম।
ঝালকাঠি সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সহসভাপতি হেমায়েত উদ্দিন হিমু বলেন, পার্কটি গড়ে উঠলে মানুষের চিত্তবিনোদনের একটি নির্দিষ্ট স্থান হবে। নদীর তীরে বসে সমুদ্রের বীচে ঘোরার তৃপ্তি পাওয়া যাবে। সন্ধ্যায় সুর্যাস্ত দেখাও যাবে। জেলা প্রশাসকের এ মহতি উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তিনি আমাদের জেলাবাসীর জন্য আর্শিবাদ হয়ে থাকবেন।
ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তৌহিদ হোসেন খান বলেন, আমাদের শহরের মধ্যে একটি সুন্দর পার্ক হচ্ছে, এটা আনন্দের খবর। সুগন্ধা নদীর যৌন্দর্যও দেখা যাবে পার্কে বসে। একই সঙ্গে নদী দেখা হলো, আবার মনোরম পরিবেশে সময় কাটানোও গেলো। তবে পার্কের মধ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। তাহলে শিশু, কিশোর ও বয়স্করাও সেখানে গিয়ে বসতে পারবে।
ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের সভাপতি শিশু সংগঠক কাজী খলিলুর রহমান বলেন, পার্কটির সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শেষ হলে এটি জেলার একটি আকর্ষণীয় স্থান হবে। এখানে মানুষ চিত্তবিনোদনের জন্য ছুটে আসবে। জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক একজন ভাল মানুষ বিধায়, সব ভাল কাজগুলো হচ্ছে। ডিসি পার্ক এবং কালেক্টরেট স্কুলটি তিনি করে জেলাবাসীকে ধন্য করেছেন।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক বলেন, ঝালকাঠিতে কালেক্টরেট স্কুল ছিল না। আমরা সুগন্ধা নদী তীরে একটি স্কুল করেছি। তার পেছনে ছায়াসুনিবির পরিবেশে আমরা ডিসি পার্ক করেছি। পার্কের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ চলছে। কাজ সম্পন্ন হলে ডিসি পার্কটি একটি আকর্ষণিয় স্থান হবে। এখানে মানুষ নিরাপদে ঘুরতে আসতে পারবেন।